কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলি ইউনিয়নের দিয়ার আমখোলা গ্রামের কয়েকজন তরুণ খেলাধুলার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছেন। স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার ও জনপ্রিয় অনলাইন গেমের আসক্তির ফলে শিশু-কিশোররা মাঠের খেলাধুলা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে—এমন বাস্তবতাকে বদলানোর লক্ষ্যেই তারা এই প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছেন।
বরিশালের বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক আইন বিভাগের ছাত্র মো. ছগির ও আরও তিনজন তরুণ মিলে কারীমিয়া কেরাতুলকুরআন মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি খেলাধুলার মাঠ তৈরি করেছেন। মো. ছগির বলেন, "বর্তমানে বেশিরভাগ শিশু-কিশোর স্মার্টফোনে আসক্ত হয়ে পড়েছে। আমরা চাই, তারা মাঠে এসে খেলাধুলা করুক, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকুক।"
তবে মাঠের অভাবও একটি বড় সমস্যা। অধিকাংশ জমি কৃষিকাজের জন্য ব্যবহৃত হওয়ায় খেলার জন্য উন্মুক্ত স্থান পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও এই তরুণরা নিজেদের প্রচেষ্টায় ফুটবল খেলার জন্য একটি উপযুক্ত স্থান নির্ধারণ করেছেন এবং খেলাধুলার প্রতি স্থানীয়দের আগ্রহ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
স্থানীয় যুবক হাসান বলেন, "আমরা ছোটবেলায় মাঠে খেলাধুলা করতাম, কিন্তু এখনকার শিশুরা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। আমরা চাই, সবাই মাঠে এসে খেলুক ও সুন্দর সময় কাটাক।"
আরেক তরুণ যুবক মো. বাইজিত বলেন, "প্রথমদিকে আমরা কয়েকজন মিলে খেলতে শুরু করি, এরপর ধীরে ধীরে অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়। এখন প্রতিদিন বিকেলে এখানে খেলাধুলার প্রাণ ফিরে এসেছে।"
এ উদ্যোগ সম্পর্কে স্থানীয় মো. সোলেমান বলেন, "তরুণদের এই প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়। খেলাধুলা শুধু শারীরিকভাবে নয়, মানসিকভাবেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে নতুন প্রজন্ম আবার মাঠের খেলাধুলার গুরুত্ব বুঝবে।"
তরুণদের এই প্রচেষ্টার ফলে এখন প্রতিদিন বিকেলে অনেক যুবক ও শিশু মাঠে ফুটবল খেলতে আসে। মাঠে সময় কাটানো ও খেলাধুলায় অংশগ্রহণ তাদের মন ও শরীরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার গুরুত্ব বুঝতে পারছে।
গ্রামের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, যা নতুন প্রজন্মকে মাঠের খেলাধুলার প্রতি আকৃষ্ট করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
Post a Comment