নিজস্ব প্রতিবেদনঃদোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও মব জাস্টিসের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা, চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে আজ বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকার গাজীপুরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার সাবেক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি শহীদ মাওলানা রঈস উদ্দীনের নির্মম হ'ত্যা'র প্রতিবাদে আয়োজিত এই সমাবেশে হাজারো সাধারণ জনগণ, আলেম-ওলামা, সংগঠক ও ছাত্রসেনার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রচার উপকমিটির সদস্য মাওলানা এনাম রেজার সঞ্চালনায় ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাহেদুল আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় মহাসচিব, জননেতা অধ্যক্ষ স.উ.ম. আব্দুস সামাদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা ও ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ স উ ম আব্দুস সামাদ বলেন, "শহীদ রঈস উদ্দীনের রক্তের ঋণ আমরা শোধ করবো। হা'ম'লাকারী ও তাদের মদদদাতারা মনে রাখুক—তাদের বিচার এ মাটিতেই হবে। শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। ফারুকীর রক্তের দাবি যেভাবে আজও জ্বলন্ত, রঈসের রক্তও জ্বলবে, দাবী তুলবে, বিচার আদায় করে ছাড়বে।"
সমাবেশের বিশেষ অতিথি জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার সিনিয়র আরবী প্রভাষক কবি ও লেখক হাফেয আল্লামা আনিসুজ্জামান বলেন, "যে রাষ্ট্র আহত বন্দীর চিকিৎসার দায়িত্ব পালন করে না, সে রাষ্ট্র মানবতার মুখে কলঙ্ক। আজ রঈস উদ্দীনের মৃত্যুর জন্য কেবল হা'ম'লাকারীই নয়, বরং এই নিষ্ক্রিয় রাষ্ট্রযন্ত্রও সমান দায়ী।"
ইসলামিক স্কলার আহমদুল্লাহ ফোরকান খান বলেন, "রঈস উদ্দীনের শহাদত প্রমাণ করেছে—ইসলামের পথে যারা অবিচল, তাদের কণ্ঠ রোধ করা যায় না। আমরা বলে দিতে চাই: এক রঈসকে হ'ত্যা করলে হাজারো রঈস জন্ম নেবে। শহীদের র'ক্ত দিয়ে এই জমিন আবার তওহীদের দীপ্তি ছড়িয়ে দেবে।"
সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, মাওলানা রঈস উদ্দীন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা ঢাকা মহানগরের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য, বর্তমানে গাজীপুর আহলে সুন্নাতের দায়িত্বশীল, ছিলেন এক অনড় আদর্শের ধারক ও বাহক। গত ২৬ এপ্রিল ঢাকায় আয়োজিত "Mass Gathering for Palestine" কর্মসূচিতে তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন এবং স্থানীয় যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে তওহীদ ও রিসালাতের পতাকা উঁচিয়ে ধরেন।
কিন্তু এই ধর্মীয় ও মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ময়দানে দাঁড়ানোই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাঁর জন্য। সমাবেশ শেষে একটি ধর্মের লেবাসধারী একটি উগ্র স'ন্ত্রা'সী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে উস্কানি সৃষ্টি করে এবং পূর্বপরিকল্পিতভাবে মাওলানা রঈস উদ্দীনের ওপর নির্মম হা'ম'লা চালায়। হা'ম'লার ফলে গুরুতর আ'হত অবস্থায় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে পুলিশ তাঁকে চিকিৎসা না দিয়ে অবহেলার পরিচয় দেয়। একদিকে দেহের মারাত্মক আঘাত, অন্যদিকে পুলিশের নির্মম অবহেলায় মাওলানা রঈস উদ্দীন ধুকে ধুকে শহীদ হন।
সমাবেশে বক্তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটি শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, বরং এটি মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত। হামলাকারী কুচক্রী মহল এবং দায়িত্বহীন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।
এছাড়াও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা করিম উদ্দীন নুরী, মাওলানা সৈয়দ আবু নওশাদ নঈমী, ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ আবু আজম, এম. মহিউল আলম চৌধুরী, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, গিয়াস উদ্দিন, আলী হোসাইন চৌধুরী, জামাল উদ্দীন, মুহাম্মদ আলমগীর বঈদী, আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক, আলহাজ্ব ওয়াহেদ মুরাদ, মাঈনুদ্দীন চৌধুরী হালিম, কাজী আহসানুল আলম, মাওলানা মুখতার আহমদ রজভী, মাওলানা সোহাইল উদ্দীন আনছারী, এ ডি এম জাহাঙ্গীর, ইব্রাহীম খলিল, মাওলানা মাহবুবুল হক, মফিজুর রহমান, হাবিবুল মোস্তফা সিদ্দিকী, আলমগীর হোসাইন, আমান উল্লাহ আমান, জি এম মামুনুর রশীদ, রোকনুদ্দীন মুহাম্মদ ফরহাদ, হারুনুর রশীদ ক্বাদেরী, আব্দুল্লাহ আল জাবের, রিদুয়ান হোসাইন তালুকদার পাপ্পু, আদনান তাহসিন আলমদার, আবু ছাদেক সিটু, কাজী শফিউল আজম, মুহাম্মদ রাশেদুল বারী, আ ল ম হুমাইর কায়সান, মুশফিক ইলাহী, মুনির উদ্দীন, মাসরুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, এইচ এম ফোরকান উদ্দীন, জিয়া উদ্দীন আহমদ নঈম, মুনীর উদ্দীন, মুহাম্মদ ওসমান, এনামুল হক মুন্না, সৈয়দ মুহাম্মদ তারেক, ফাহাদ বিন আজাদ সিদ্দিকী, মুহাম্মদ মোশাররফ, মুহাম্মদ ফারুক হোসাইন, মোজাম্মেল হক শাহেদ, আব্দুর রশীদ, প্রমূখ।